মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০

'শিক্ষা' নিয়ে কিছু সোজা কথা:

'পোষাক হচ্ছে বাইরের আবরণ, মানুষের আসল সৌন্দর্য হলো তার জ্ঞান।'—উক্তিটি কার নিশ্চয় ধরে ফেলেছেন? 'Try to know thyself' বলা সেই মহান শিক্ষক সক্রেটিসের। খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০, পৃথিবীর আলোতে এসেছিলেন এই মহান মনীষী; যাকে বলা হয় আজকের প্রথাগত শিক্ষার পথ-প্রদর্শক ও প্রবর্তক। স্কুলিং করে জ্ঞানের প্রদীপ্ত শিখা জ্বালিয়ে তিনিই শিক্ষার আলোতে আলোকিত করে এই পৃথিবীকে উদ্ভাসিত করে গিয়েছিলেন। অবশ্য আমরা বেশিরভাগ তাঁকে প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক হিসেবেই চিনি ও জানি। এই মহান দার্শনিক সম্পর্কে জানার জন্য আজকের প্রজন্ম তেমন একটা আগ্রহ প্রকাশ করে না বা জানতেও চায় না। অনেকে আবার প্রশ্ন করে বসে, এই সব জেনে কি লাভ? 

ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে মনীষীদের জীবনী থেকে প্রকৃত জ্ঞানের অন্বেষণে প্রকৃতি থেকে প্রকৃতপক্ষে একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি। প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতি থেকে যতোটা শিখতে পারা যায় তা অন্য কারো কাছ থেকে বা বইপুস্তক পাঠ করে শিখতে পারা যায় বলে আমার মনে হয় না। মহান মনীষীগন তাঁদের জীবনী থেকে সেই শিক্ষাই আমাদের দিয়ে গেছেন। এই সুদীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে আজ পর্যন্ত একটিবারের জন্যও আমার মনে হয়নি আমি একজন শিক্ষক, সব সময় মনে হয়েছে আমি একজন শিক্ষার্থী; সত্যিকার অর্থে ছাত্রছাত্রীদের সাথে থেকে আমি শিখেছি, শিখছি, প্রতিক্ষেত্রে প্রতিপদে। আর এই শিক্ষা হেকেই দু চার কথা লেখতে চেষ্টা করি। শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য হলো সত্যিকারের জ্ঞানার্জন। জ্ঞানহীন শিক্ষা সলতেহীন মোমবাতির মতো। শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যা দিয়েই যা অর্জন করা মোটেও সম্ভব নয়। তাই আমি আমার ছাত্রছাত্রীদের সব সময় বলি বেশি বেশি বই পড়তে এবং সুযোগ পেলেই প্রকৃতির সাথে মিশতে। 

আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন আমাদের শিক্ষকরা আশপাশ, প্রকৃতি ও পরিবেশ এবং মনীষীদের জীবনী থেকে আমাদের অনেক বেশি শিক্ষা দিতেন, তখনকার দিনের জাতীয় পাঠ্যপুস্তকও সেইভাবেই সাজানো ছিল। প্রায় প্রত্যেক পাঠ্যবইয়েই বিখ্যাত মনীষীদের কারো না কারো জীবনী সম্পৃক্ত থাকতো। কিন্তু কেমন করে পরে একসময় সেইসব তুলে নেয়া হয় তা টেরই পাইনি। না থাকলে কতটা দোষই-বা এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের দেয়া যায়? দোষ তো আমাদের। আজও আমরা পারিনি এদেশের জন্য একটা সঠিক সুনির্দিষ্ট একক শিক্ষানীতি প্রবর্তন করতে, শিক্ষাকে একটা পূর্ণাঙ্গ কাঠামোতে দাঁড় করাতে। হযবরল শিক্ষানীতি পদ্ধতি ও ব্যবস্থা দিয়েই যেনতেন ভাবে যেন ঠেকার কাজ এই দেশে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। জাতি গঠনে শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজনীয়তা আজও এ জাতীর গুরুত্বপূর্ণ কর্তাব্যক্তির কেউ অনুধাবন করতে পারেনি বা করেনি। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে বা হচ্ছে - শিক্ষার মান নামতে নামতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। 

আমার এই কথায় হয়তো অনেকেই দ্বিমত প্রকাশ করতে পারেন, কষ্ট পেতে পারেন। এবং এ ও জিজ্ঞেস করতে পারেন, যে সব লাখ লাখ ছাত্রছাত্রী প্রতিবছর মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হচ্ছে তারা কি সবাই অজ্ঞানী? তারা মানসম্পন্ন শিক্ষিত নয়? আমি মোটেও তা বলছি না। অনেকেই বেশ ভাল করছে। তাদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। দেশের সার্বিক শিক্ষার কথা বিবেচনায় এনে প্রকৃত জ্ঞানের সংজ্ঞায় ফেললে হয়তো আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন মোল্লার দৌঁড় কত? আপনি যদি একটু চোখকান খোলা রেখে থাকেন তবে নিজেই টের পাবেন ওদের আসল সমস্যাটা কোথায় এবং কি? 

আমি অনেক চিন্তা করে আবিষ্কার করেছি - প্রকৃতির সাথে বেড়ে উঠা ছেলেমেয়েরাই তুলনামূলকভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে নিজেদের স্থান বেশি করে নিচ্ছে, মাশরাফি বা মোস্তাফিজুর হয়ে দেশের সম্মান উজ্জ্বল করছে। সাংসারিক সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় প্রায় প্রতিক্ষেত্রে একটু লক্ষ করলেই টের পাবেন শহুরে হাইব্রিড মুরগীর মত বেড়ে উঠা ছেলেমেয়েরা অনেকটা পিছিয়ে পরছে। এতে করে এরই মধ্যে একটা বিরাট কমিউনিকেশন গ্যাপ এর সৃষ্টি হয়ে গেছে। শুধুমাত্র অর্থের মাপকাঠিতে ফেলে চিন্তা করলে হবে না, সার্বিক দিক বিবেচনায় আনতে হবে। নতুন প্রজন্ম অত্যন্ত ধীর গতিতে হাঁটছে এবং সামাজিকভাবে অনেক পিছনে পরে আছে। সক্রেটিসের " Try to know thyself "-এ পরে তারা তাদের নিজেদের দুর্বলতার কথা ঠিকই জানতে পারছে, যা তাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে তাদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যতার বড় বেশি অভাব বোধ করছে। পোশাকি চাকচিক্যে মেকী জ্ঞান অনেকটা ঠুনকো কাঁচের মতই হয়। 

আগের দিনের একজন মেট্রিক পাশের জ্ঞানের কাছে আজকের দিনের একজন মাষ্টার্সও ঘেষতে পারছে না। আজকের অনার্স মাষ্টার্স করা কাউকে যদি প্রকৃত মৌলিক সংখ্যা কয়টি ও কি কি প্রশ্ন করা হয়, দেখা যায় খুব কম সংখ্যকই এর সঠিক উত্তর দিতে পারছে। কাউকে যদি বলা হয় হাতে হাতে বর্গমূল বের করতে, সে এক লজ্জাসকর মহা মুশকিলের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। মৌলিক বিষয়গুলো এখন আর বইপুস্তকে সন্নিবেশিত করা হয় না। যতোটুকোইবা আছে প্রযুক্তির কল্যাণে শিক্ষকরা তাও শিখাচ্ছে না; যোগ অংঙ্ক শিখাচ্ছে মোবাইল বা ক্যালকুলেটর দিয়ে। তাই আজকের প্রজন্ম সম্পূর্ণভাবে মৌলিক শিক্ষা বঞ্চিত হয়ে বড় হচ্ছে এবং মৌলিক বিষয় শিক্ষার প্রতি তাদের অনাগ্রহও দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। শিক্ষিত অশিক্ষিত প্রায় সকল অভিভাবকই এখন বাণিজ্যিক শিক্ষার পিছনেই ছুটছে। 

নতুন এক প্রথা চালু হয়েছে, গ্রামের সচ্ছল পরিবারের ছেলেমেয়েদেরও এখন শহর কেন্দ্রিক শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বাচ্চার শিক্ষার ক্ষেত্রে কোথায় ভর্তি করালে কার কাছে গেলে কি করে কত সহজ উপায়ে একটা A+ পাওয়া যায় এটাই যেন সবার এক মৌন প্রতিযোগিতা এবং সকলের একমাত্র প্রচেষ্টা। কতটুকো জ্ঞানার্জন করে বাচ্চাটা বড় হচ্ছে তা জানার কারো মোটেও আগ্রহ নেই। A+ পেলেই আমরা সবায় বুঝে নেই সে একজন ভাল ছাত্র; বুয়েট বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকুক বা না টিকুক। কতটা জ্ঞানার্জন করে কি ভাবে এই A+ পেয়েছে তা আমরা ভেবে দেখি না। কি করে প্রকৃত জ্ঞানার্জন করা যায় এ নিয়েও আমাদের কারো কোন ভাবনাচিন্তা নেই। তাই, দিনদিন এদেশে শিক্ষিতের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু তুলনামূলকভাবে শিক্ষার মান কমছে। 

সেন্ট নিকোলাস স্কুলে আমাদের গণিত শিক্ষক ছিলেন সচীন স্যার। ব্রিটিশ আমলে শুধুমাত্র মেট্রিকুলেশন করে তিনি সেন্ট নিকোলাস স্কুলের মত আমেরিকান ব্রাদারস পরিচালিত স্কুলে দশম শ্রেণী পর্যন্ত গণিত ক্লাস নিতেন এবং যে কোন ধরনের গণিতের সমাধান তিনি অতি সহজ ও সাবলীল অনন্য একাধিক পদ্ধতিতে অনায়াসে করে দিতেন। একটা অংককে যে কত ভাবে কত পদ্ধতিতে তিনি সমাধান করতে পারতেন এবং কত সহজভাবে আমাদের তা বুঝাতে পারতেন সে কথা মনে হলে আজও শিহরিত হই। এতো সুচারুভাবে তিনি গণিত শিখাতেন যা সেই স্কুলের অন্য কারো পক্ষে আদৌ সম্ভব ছিল না। 

সেই সময় ঐ স্কুল বা অন্য কোন স্কুলের বিএসসি এমএসসি টিচাররাও গণিত নিয়ে অন্তত তাঁর সাথে টেক্কা দিতে সাহস পেতেন না। প্রধান শিক্ষক সহ তৎকালে সেন্ট নিকোলাসে ৪/৫ জন ইংরেজ ব্রাদারস সব সময় থাকতেন; দেখেছি তাঁরাও সচীন স্যারকে 'পণ্ডিত স্যার' বলে বেশ সমিহ করতেন। ঐ স্কুলের ছাত্ররা নিশ্চয় নির্দ্বিধায় স্বীকার করবে তৎকালে গণিতের জন্য 'সচীন স্যার'-এর বিকল্প অন্য কেউ ছিলেন না। আমার প্রিয় শিক্ষক এই সচিন স্যার। প্রকৃতপক্ষে, যতটুকো মৌলিক গণিত আমি শিখেছি বা শিখতে পেরেছি তা এই স্যারের কাছ থেকেই শিখেছি। উচ্চ শিক্ষায় যা হয়েছে তা হলো শুধু সংযোজন আর সংবর্ধন। ছাত্র জীবনের বিন্যাস-সমাবেশে শিক্ষকতার শেষ জীবনে এসে আজ আমার কাছে মনে হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে স্কুল জীবনটাই হলো মৌলিক শিক্ষা অর্জনের উৎকৃষ্ট ও প্রকৃত সময়। 

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিক্রমায় সব কিছুর পাশাপাশি এদেশের জাতীয় পাঠ্যপুস্তকও বদলে যায়! প্রতিযোগীতা করে বই সংশোধন সংবর্ধন ও পরিবর্তন শুরু হয়ে যায়। এই দলকানা জাতি সব সময় যে যার দলের হয়েই পক্ষপাতমূলক কাজ করে চলছে; তাও ঐ অশিক্ষারই জন্য। উপড়ের নির্দেশ পবিত্র বাণী সম তারা আওড়াচ্ছে। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করলে এই কথাটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে এদেশে শিক্ষা সব সময় সবার কাছেই একটি অতি উপেক্ষিত বিষয় হয়েই রয়ে গেছে। অন্য সব সেক্টরে উন্নতি উন্নয়ন হলেও শিক্ষার ক্ষেত্রে কতটা উন্নতি ঘটেছে তা সর্বজনবিদিত। অনেক চিন্তা করে আমি আবিষ্কার করেছি এতো এতো জ্ঞানীগুণী এদেশে জন্ম নেয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষা নিয়ে কোন বড় ধরনের হইচই বা বিপ্লব ঘটেনি। ভাবছি, কেন হয়নি? 

শিক্ষার্থীর স্বার্থ রক্ষার্থে আজও এদেশে কোন বড় ধরণের আন্দোলন হয়নি। যা হওয়ার দরকার ছিল সবচেয়ে বেশি এবং সব কিছুর আগে। কোন দলই শিক্ষা নিয়ে কখনো কোন বড় ধরণের উচ্চবাচ্য করেনি; এমন কি শিক্ষকরাও। একমাত্র ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারকে দেখেছি একমুখী শিক্ষা, প্রশ্নপত্র ফাঁস বা শিক্ষার মৌলিক বিষয়গুলি নিয়ে ছাত্রছাত্রীর স্বার্থে রাস্তায় নামতে। অথচ এই মহান শিক্ষককেই এদেশের কোন দল দেখতে পারে না। একদল মনে করে জাফর ইকবাল তাদের শত্রু, অন্যদল তাদের দলীয় দৃষ্টিকোণের ব্যত্যয় ঘটলেই অপদস্থ অপমানিত করে। এদেশে অন্যরাও আন্দোলন করেছে, তবে যতটুকো করেছে তা হয়তো করেছে ব্যক্তিস্বার্থে নয়তো গোষ্ঠীস্বার্থে; শিক্ষকরা করেছে তাদের বেতনভাতা বৃদ্ধি বা অন্য কোন সুবিধার স্বার্থে, অন্যরা করেছে দলীয় স্বার্থে। জাতি গঠন ও শিক্ষার স্বার্থে, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে, শিক্ষার মান উন্নয়নের স্বার্থে এদেশে কেউ কখনো কোন আন্দোলন করেছে কি? যদি করতো, তাহলে হয়তো আজ শিক্ষা এতোটা উপেক্ষিত থাকতো না; শিক্ষাকে সর্বাপেক্ষা গুরুত দেয়া হত এবং একটি সুন্দর জাতি গঠিত হত। 

তৎকালীন গ্রিস ছিল পৃথিবীর অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর মতই অত্যন্ত গোষ্ঠী প্রাধান্য বিস্তারকারী অসভ্য জাতির একটি। সেই সমাজে জ্ঞানের প্রদীপ প্রজ্বলিত করেছিলেন সক্রেটিস। তিনি ছিলেন মহান অসাধারণ একজন শিক্ষক। যিনি কেবল শিষ্য গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে বিশ্বাসী ছিলেন না, শিষ্য বানিয়েও শিক্ষা দিতেন। তাঁর কোন নির্দিষ্ট শিক্ষায়তন ছিলনা। যেখানেই যাকে পেতেন সেখানেই তাকে মৌলিক প্রশ্নবানে জর্জরিত করতেন এবং উত্তর বোঝানোর চেষ্টা করতেন। তিনিই প্রথম মানব চেতনায় আমোদের ইচ্ছাকে জাগিয়ে তুলেছিলেন এবং ইচ্ছার নিন্দাও করেছিলেন। কিন্তু ইচ্ছার সৌন্দর্য্য দ্বারা নিজেও আনন্দিত হয়েছিলেন অপরকেও আন্দোলিত করেছিলেন। মহান মনীষী প্লেটো তাঁরই একজন সার্থক ছাত্র। সক্রেটিস সম্বন্ধে আমরা যতোটুকু জেনেছি তা এই প্লেটোর কল্যাণে; কারণ সক্রেটিস কোন বই লিখে যাননি। 

আড়াই হাজার বছরেরও আগে পৃথিবীতে আসা এই গ্রিক শিক্ষক ও দার্শনিককে আমরা চিনি শুধুমাত্র একজন জ্ঞানের প্রদীপ প্রোজ্জ্বলনকারী হিসেবে। এই সক্রেটিস কখনো খাবার পেতেন আবার কখনোবা ভূখা থাকতেন। অজ্ঞানী ধনীক সুবিধাভোগীর দল জ্ঞানী সক্রেটিসকে মেনে নিয়ে পারেনি, তাই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে 'হেমলক' নামক বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছিল। পরবর্তীতেও শুধুমাত্র জ্ঞানের জন্য অজ্ঞানীরা অনেক জ্ঞানতাপসকেই মেরে ফেলেছিল; কিন্তু জ্ঞানের প্রদীপ্ত শিখা কিন্তু থেমে থাকেনি। 

মহান শিক্ষক সক্রেটিসের মাত্র একজন ছাত্র প্লেটোর মাধ্যমে আজ পৃথিবীতে জ্ঞানের প্রদীপ্ত শিখা প্রোজ্জ্বলীত, দাউ দাউ করে জ্বলছে। সেই সব ধনীদের কিন্তু আজ আর কেউ চিনে না জানেও না। আমাদের যুগের এদেশেরই হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক জহিরুল ইসলামকে এখনকার প্রজন্ম আর চিনেই না! তার সম্পদের খবর এখনই আর কেউ জানে না। কিন্তু জ্ঞানের যে প্রদীপ্ত শিখা সক্রেটিস তুলে দিয়ে গিয়েছিলেন প্লেটোর হাতে, সেই প্লেটো তা তুলে দিয়েছিলেন এরিস্টটলের হাতে, এরিস্টটল দিয়েছেন আলেকজান্ডার দি গ্রেটকে, আলেকজান্ডার দি গ্রেট সাড়া পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন। 

তাই, শুধুমাত্র অর্থ-যশের লোভ না করে প্রত্যেকের উচিত প্রকৃত জ্ঞান অন্বেষণ করা। আর এই দীক্ষাই আমাদের সবার নেয়া-দেয়া উচিত; সন্তানকে বলা উচিত- পড় এবং কিছু শিখতে চেষ্টা কর।।

মুহাম্মদ ওয়ালিউল্যাহ 
০৭ - ১২ - ২০১৫।

1 টি মন্তব্য: