গত ২৩ এপ্রিল এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুম্মা এবং রমজানের তারাবির জামাত সীমিত আকারে আদায় করার জন্য সরকার থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়; সেই থেকে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সংখ্যক মানে মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম খাদেম এবং মসজিদ স্টাফ নিয়ে জামাত আদায় হতো মসজিদে মসজিদে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যা যথাযথ ছিল। কিন্তু ৭ মে হটাৎ দেশে কোন কি ওহির মাধ্যমে অন্যসব কিছুর মতো মসজিদের বিধিনিষেধও তুলে দেয় হলো! মাশা'আল্লাহ! ৮ মে শুক্রবার মসজিদে মসজিদে মুসল্লির ভিড় লেগে গেল; সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত নামাজও আদায় হচ্ছে। কিন্তু, দেশের সার্বিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?
আলেমরাই হলেন নবী-রাসূলগণের যথার্থ ও প্রকৃত ওয়ারিস বা উত্তরাধিকার। অথচ আজকের দুনিয়ায় সেই ধরনের আমলের সংখ্যা শূন্যের কোঠায়; এখন বেশিরভাগ প্রথাগত লোকরাই আলেম সেজেছে। লোভ আর ঔদ্ধত্য আজকের বেশিরভাগ আলেমকে পথহারা করে রেখেছে! তারা এখন শুধু নিজেদের সাময়িক লাভের পিছনেই পড়ে আছে। আর এ কারণে তারা অধিকাংশ ভাল বিষয়কে মন্দ ও মন্দ বিষয়কে ভাল বিবেচনা করছে; এমনকি প্রকৃত দ্বীনী এলেম তাদের কাছে পুরনো হয়ে গেছে। তাই তো, হেদায়েতের চিহ্ন পৃথিবীর বুক থেকে বলতে গেলে মুছেই গেছে।
বর্তমান আলেমরা মানুষকে একথাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, এলেম হয় হবে রাষ্ট্রীয় ফতোয়া, যার মাধ্যমে শাসকরা ইতর শ্রেণির বিবাদ-বিসংবাদের মীমাংসা করতে গিয়ে সাহায্য গ্রহণ করবে; আর তা না হলে হবে বাহাস-মুসাহাবা তথা তর্ক-বিতর্ক, যাতে করে দাম্ভিক অহংকারীরা প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করে নিজেদেরকে বিজয়ী করার উপায় বানাবে; অথবা এলেম হবে সেসব ছন্দপূর্ণ মসৃণ সংলাপ- যেগুলো ওয়াজেরিয়ানরা সাধারণ মানুষকে পথভ্রষ্ট করার অবলম্বন হিসাবে সাব্যস্ত করবে! এই তিন প্রকার এলেম ছাড়া তারা যে হারাম উপার্জনকারী দুনিয়াদারদের মালামাল আয়ত্ত করার আর কোন ফাঁদই খুঁজে পাবে না?
পূর্ববর্তী নেক ও সৎ মানুষগুলো আখেরাতের যে পথে চলতেন, সে পথের জ্ঞান মানুষের সামনে থেকে আজ লুপ্ত হয়ে গেছে, তার নামগন্ধও এখন আর নেই। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আ'লামীন সে জ্ঞানকেই তাঁর কিতাবে ফিকাহ, হেকমত, প্রজ্ঞা, আলো, জ্যোতি, হেদায়েত ও পথপ্রাপ্তি প্রভৃতি নামে অভিহিত করেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে জামাতে তিন ফিট দূরে দূরে কাতারবন্দী হওয়ার ফতোয়া কে দিয়েছেন, এবং কেমন করেই-বা এমন একটি আদেশ জারি হলো দুনিয়াজোড়া, কিছুতেই আমার বুঝে আসছে না??
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর থেকে মসজিদে জামাত নিয়ে যা হচ্ছে, বিশেষ করে আমাদের দেশে যা ঘটেছে এবং ঘটছে তা দেখে আমার কাছে সবই রীতিমতো নাটক মনে হচ্ছে! অথচ, মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের বিষয়ে ফয়সালা দিয়েছেন খোদ আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা এবং তাঁর প্রিয় হাবীব (সাঃ)। মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত বলেন, 'রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো।' —(সূরাবাকারা: ৪৩) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'জামাতে নামাজের ফজিলত একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।' —(সহিহ বুখারি)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সারা জীবন জামাতের সাথেই নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি ইন্তিকালপূর্ব অসুস্থতার সময়ও তিনি জামাত ছাড়েননি। সাহাবায়ে কেরামেদের পুরো জীবনও সেভাবেই অতিবাহিত হয়েছে। —(সহিহ বুখারি: ৬২৪) তাই, পুরুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই জামাতে আদায় করা সুন্নাতে মুআক্কাদা, যা ওয়াজিবের সঙ্গে তুলনীয়; অর্থাৎ এটি ওয়াজিবের কাছাকাছি। —(মুসলিম: ১০৪৬) কোনো ওজর বা অপারগতা ছাড়া জামাতে শরিক না হওয়া কোনভাবেই বৈধ নয়। যে ব্যক্তি জামাত ত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে গুনাহগার হবে। —(আবু দাউদ: ৪৬৪) বিশেষ প্রেক্ষিতে মসজিদ আবাদের ক্ষেত্রে ইমামের সঙ্গে তিনজন মুক্তাদি হলে নামাজ আদায় হয়ে যায়। —(আবদুর রাজ্জাক ফি মুসান্নাফিহি : ৩/২৯৯)
আগেই উল্লেখ করেছি আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সূরা বাকারায় স্পষ্টতই রুকুকারীদের সাথে রুকু করার নির্দেশ দিয়েছেন। সূরা নিসা-য় জামাত এবং কাতারের ব্যাপারে বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া আছে। জামাতে কাতারবন্দী হওয়া নিয়ে এমন আরও বেশকিছু আয়াত আমার নজরে আছে। এসব আয়াতের ব্যাখ্যায় অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। মসজিদে জামাতে সালাত আদায় করা ও কাতারবন্দী হওয়া এসব নিয়ে নতুন কিছু সংযোগ বা সংযোজনের সুযোগ বর্তমান দুনিয়ার কারো আছে কি??
হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, 'রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কাতারের এক কিনারা হতে অপর কিনারা পর্যন্ত যেতেন। আমাদের সিনা ও কাঁধের উপর হাত রেখে কাতারগুলিকে সোজা করতেন এবং বলতেন, কাতারে আগপিছ হয়ো না। যদি এমন হয় তবে তোমাদের অন্তরে একের সাথে অন্যের বিভেদ সৃষ্টি হয়ে যাবে। আর এও বলতেন, আল্লাহ তা’আলা প্রথম কাতারওয়ালাদের উপর রহমত নাযিল করেন এবং ফেরেশতাগণ তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেন।' —(আবু দাউদ)
নামাজে দাঁড়ানোর জন্য ধনী-গরিব বাছ-বিচার বা কোনোরূপ ভেদাভেদ করা যায় না। এখানে সবায় সমান এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতার-বন্দি হয়ে সবায় একত্রে নামাজ আদায় করতে হয়। মসজিদ কমিটির কেউ, সমাজের গণ্যমান্য কেউ, এমনকি কেউ যদি মসজিদের জমিদাতা বা অর্থ যোগানদাতাও হন, তবু তাঁর জন্য বিশেষ কোনো জায়গা মসজিদে বরাদ্দ রাখা যায় না! অসুস্থ বা বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্যও আগে থেকে সামনের কাতারে জায়গা রাখার কোন নিয়ম নেই। মসজিদ সবার জন্য সমান এবং একই রকম। আর কাতার হলো প্রকৃতঅর্থে— মুসলমানের সাম্য, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের অমর বন্ধনের প্রতীক।
জাবির ইবনে সামুরা আস-সুওয়ায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'তোমরা কি এভাবে কাতারবন্দী হয়ে দঁড়াবে না, যেভাবে ফিরিশতাগণ তাদের রবের সামনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ায়? আমরা বললাম, ফিরিশতাগণ তাদের রবের সামনে কীভাবে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ায়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তারা সামনের কাতারগুলো আগে পূর্ণ করে এবং গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়ায়।' —(সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৩০)
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'তোমরা কাতারে পরস্পর মিশে দাঁড়াও। ঘন করে কাতার বাঁধো এবং কাতারগুলোকে পরস্পর নিকটবর্তী রাখো। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াও। সেই মহান সত্ত্বার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, কাতারের মধ্যেকার ফাঁকে আমি ছোট ছোট বকরীর (ছাগল) মতো শয়তানকে প্রবেশ করতে দেখছি।' —(সুনানে নাসাঈ: ৮১৫; সুনানে আবু দাউদ: ৬৬৭) এ ছড়াও হাদীসটি নকল করা হয়েছে সহিহ বুখারি, মুসলিম, ইবনু মাজাহ, আহমাদ এবং দারেমীতে।
মসজিদে জামাতে কাতারবন্দী হওয়ার নিয়মকানুন সারে চৌদ্দশ বছর ধরে স্থীরকৃত এবং একই নিয়মে চলে আসছে। আগেও এর চেয়ে অনেক কঠিন দূর্যোগ পরিস্থিতি পূর্ববর্তী মুসলমান যুগে যুগে মোকাবেলা করেছেন, কিন্তু কাতারবন্ধী প্রক্রিয়া পরিবর্তন কেউ কখনো করেছেন কি-না আমার জানা নেই, যদি কারো জানা থাকে আমাকে জানাবেন। যদিও, মসজিদ সাময়িক বন্ধ রাখার বেশ কিছু ঘটনা ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায়। পূর্ববর্তী পৃথিবী বিখ্যাত সব আলেম ওয়ালারা কাতারের ব্যাপারে পাইওনিয়র মুসলমানদের দিকনির্দেশনাই মেনে চলেছেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সবকিছুর মতো হটাৎ করে মসজিদের জামাতে কাতারবন্দীর মাসালা কেমন করে চেঞ্জ হয়ে গেল? কে বা কারা এই মাসালা দিলেন?
করোনাভাইরাস আবির্ভাবের পরও খেয়াল করেছি মক্কা শরীফ মদিনা শরীফের সংক্ষিপ্ত জামাতেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁরা জামাতে দাঁড়াতেন; তিন কি চার রমজানে হটাৎ একদিন লক্ষ্য করি, শুরু হয়ে যায় তিন ফিট দূরে সরে কাতারবন্দী হওয়ার প্রাকটিস! আমাদের দেশের কোথাও কোথাও-র মসজিদে নাকি তা আগে থেকেই শুরু হয়েছিল! তখন থেকেই মাথায় চিন্তা ডুকে, কেমনে কি?? এরই মধ্যে আমি দেশের বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য আলেমের স্মরণাপন্ন হয়েছি, কিন্তু কেন যেন এ নিয়ে তাদের যুক্তির পক্ষে যেতে পারিনি পারছি না! মন থেকে সায় পাচ্ছি না তিন ফিট দূরে দাঁড়িয়ে জামাতে নামাজ আদায় করার বৈধতার ব্যাপারে।
একটি প্রশ্নই বারবার মনে উদয় হতে থাকে— বেশ কিছু কুর'আনের আয়াত ও অসংখ্য হাদিস অস্বীকার করে ইসলামের মূল ইবাদত নামাজের মতো বিষয়ে নতুন কোন মাসালা এই একবিংশ শতাব্দীতে বের করার অধিকার কারো আছে কি না?? আমি যেসকল আলেমদের জিজ্ঞেস করেছি তাদের প্রত্যেকেই অবস্থার প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। আমিও জানি- ওজরের কোন মাসালা নেই। কিন্তু করোনা কি ওজর হতে পারে?
শরিয়ার সব হুকুমই কি মানুষ ইচ্ছে করলেই পাল্টাতে পারে?? আমার এ প্রশ্নের উত্তরে দেশের স্বনামধন্য একজন আলেম বলেছিলেন— 'প্রাণের সংরক্ষণ, দ্বীন বাঁচানো, ইজ্জত বাঁচানো, সম্পদ বাঁচানো, সন্তান বাঁচানো; এই পাঁচটি জিনিস রক্ষা করার জন্য পারে।' কিন্তু, কাতার এমন হওয়ার পিছিয়ে এর একটাও কি যায়??
দেশের আলেম সমাজের প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে, এবং জাতি কৃতজ্ঞ। তাঁরা করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় তিন ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ও এক কাতার ফাঁক রেখে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের ফতোয়া দিয়েছেন। তা যদি মেনে নেই, তবে শ্রদ্ধেয় সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী সাহেবের আবিষ্কৃত ফতোয়া— 'মসজিদের খতমে তারাবীর ইমামতিতে অডিও শুনে ঘরে জামাতে মুসুল্লিদের শরিক হওয়া'-র বিষয়ে আপনাদের এতো আপত্তি কেন? তাঁর এ কথার তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা আপনারা জানিয়েছিলেন কেন?? এক কাতার গ্যাপ দিয়ে তিন ফিট দূরে দাঁড়ানো আর কিছুটা দূরে ঘর থেকে মসজিদের জামাতের সাথে শরিক হওয়ার মধ্যে পার্থক্যটা কি??
মসজিদ আল্লাহর ঘর, এতে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু যে ঘরে আপনি আমি বসবাস করছি তা কার? মসজিদে নামাজ আদায় করার তাগিদ কেন দেয়া হয়েছে? সৌহার্দ্য সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার ভ্রাতৃত্বকে সম্বৃদ্ধ করার জন্য, তাই নয় কি? কিন্তু আজ মসজিদের যে অবস্থা তাতে কি তা প্রতীয়মান হয়? করোনাভাইরাসকে কেন ভয় পেতে হবে, তার মালিককে কেন নয়? করোনার ভয়ে সারে চৌদ্দশ বছরের নিয়ম বদলাতে হবে কেন?? ওহ! মসজিদে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় জায়েজ করার মতো আরেকটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য??
আপনি নামাজ পড়ছেন কার জন্য? নিশ্চয় রবের জন্য? এ ব্যাপারে অসংখ্য কুরআনের আয়াত আছে; সূরা কাউসারে ছোট্ট একটি আয়াত—'ফাসাললি লিরাব্বিকা ওয়ানহার' অর্থাৎ, 'তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো এবং কোরবানি করো'। নিশ্চয় প্রত্যেকেই এ কথাটি নিশ্চিত স্বীকার করবেন যে, নামাজ একমাত্র আল্লাহর জন্য। যদি তাই হয়, দুনিয়ার এই কঠিন দূর্যোগের পরিস্থিতিতেও মসজিদ নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি করা হলো বা হচ্ছে কেন? ঘরে নামাজ আদায় করলে কি তা আদায় হবে না??
যেভাবে প্রতিটা মূহুর্ত অতিবাহিত হচ্ছে উৎকণ্ঠায়, মসজিদে গেলে কেউ কি পারছেন উদ্বেগ উৎকন্ঠা মুক্ত হতে? আমি তো পারছি না! আমি তো আমাকে ছাড়া সবাইকে করোনা সংক্রমিত মনে করছি। তাই, সংশয় থাকে পাশেরজন না জানি করোনা আক্রান্ত! অন্তরের এমন আবস্থা নিয়ে মসজিদে জামাতে শরিক হয়ে নামাজ আদায় করার চেয়ে আপাততঃ নিশ্চিন্তে ঘরকে মসজিদ বানানো উত্তম নয় কি?
প্রতিটা মানুষ এখন আমরা অত্যন্ত উৎকন্ঠার মধ্যে কালাতিপাত করছি। এমতাবস্থায় বারবার স্থানান্তর হওয়াটাও খুবই রিস্কি! তাই, আমি মনে করি— আপাতত ইমাম মোয়াজ্জেম খাদেম সাহেবদেরই দেয়া উচিত ফরজে কেফায়া হিসেবে মসজিদ আবাদের দায়িত্বে। নয়তো অচিরেই হয়তো মসজিদেও আক্রান্তের মহামারী লেগে যাবে।
আর এখনো যারা ওজরের বাহানা দিচ্ছেন কাতার নিয়ে, তাদের বলছি— অসুস্থতায় ওজর হয় তখন যখন কেউ অলরেডি অসুস্থ থাকে বা হয়। কিন্তু, ‘মহামারীতে অসুস্থ হবার ভয়‘ কখনই ওজর হয়না। কারণ ‘মহামারী মুসলিমদের জন্য নেয়ামত এবং আক্রান্ত হয়ে মরলে শহীদ!' —(সহিহ বুখারি—৩৪৭৪)
তাছাড়া ছোঁয়াচে কোন রোগের অস্তিত্বই ইসলাম স্বীকার করে না। রোগ দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত। সুস্থ মানুষের জন্য রোগের ভয় ওজর হলে সবার জন্য সকল অসুখের ভয়ই ওজর হতো। স্মরণ রাখবেন, জামাতে কাতারের ব্যাপারে কোনোরকম ওজরের স্থান কোন অবস্থায়ই নেই। মসজিদে যদি নামাজ আদায়েরের একান্তই ইচ্ছে থাকে, বনিতা বাদ দিয়ে স্বাভাবিকভাবে কাতারবন্দী হন।।
মুহাম্মদ ওয়ালিউল্যাহ
১৬ মে, ২০২০.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন