আল্লাহ চাহে তো দু'দিন পরই হয়তো পবিত্র রমজান শুরু হতে যাচ্ছে। হয়তোবা পরশু শুক্রবার রাতেই আমাদের তারাবী পড়তে হতে পারে। এবারের তারাবী আদায় নিয়ে নানা জনের নানান মত; তাই আজ আমিও আমার ব্যক্তিগত মত পেশ করছি।
করোনা ভাইরাসের বিস্তাররোধে পবিত্র রমজান মাসেও সৌদি আরবের মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববীতে সর্বসাধারণের জন্য তারাবিহসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে উপস্থিতি স্থগিত থাকবে। সোমবার রাতে দেশটির হারামাইন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস টুইটার ও ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সৌদি স্বাস্থ্যবিষয়ক যৌথ কমিটির পরামর্শে জনস্বার্থ বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে, সীমিত পরিসরে হারামাইন শরীফে এবং মসজিদে নববীতে তারাবীর নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। মসজিদে নববী পরিচালনা কর্তৃপক্ষ মসজিদকে জীবাণুমুক্ত রাখা ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে ধারাবাহিক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তাছাড়া আগত মুসল্লিদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা করাসহ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে করে আগত মুসল্লিদের জন্য সুস্থতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।
করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে সকলের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে আসন্ন রমজানে মসজিদে না গিয়ে ঘরে বসে তারাবি নামাজ পড়তে দেশের মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। লক্ষ্য করছি এরই মধ্যে কিছু আলেম ভার্চুয়াল মিডিয়ায় লাইভে এসে তারাবীর নামাজের জন্য মসজিদ খুলে দেয়ার অনুরোধ করছেন, আবার কেউবা চাপ সৃষ্টি করছেন! আমাদের মসজিদে আগত মুসল্লিদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা করাসহ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কে?
মসজিদকে ভাইরাস মুক্ত রখার মতো ব্যবস্থা বা নিরাপদ রাখার মতো পরিবেশ কি আমাদের দেশে আছে? তাছাড়া আধুনিক সব সুবিধা গ্রহণ করার মতো সামর্থ্য কি আমাদের আছে? কিছুতেই আমার বুঝে আসছে না শ্রদ্ধেয় আলেমরা কোন চিন্তা থেকে এমনটা বলছেন? যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত জামাত সীমিত, সেখানে তারারীর জন্য এমন চিন্তা করাটা কতটা যৌক্তিক?
মহামারি পরিস্থিতিতে জামাত সীমিত করা ইসলামে বৈধ, তারউপর রাষ্ট্রীয় আইন মেনে চলাও একজন মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারের তারাবি ঘরে আদায় করাই উত্তম। খামাখা রিস্ক নিয়ে লাভ কি? বিগত দিনে দেখেছি মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ৫/১০ উপস্থিতির বিষয় নিয়ে দেশে রক্তারক্তি কান্ড ঘটে গেছে! রমজানে তারাবী নিয়ে যে আরো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?
বিশ্বের এই নাজুক পরিস্থিতিতে মোটেও ইমোশনাল হওয়া যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজে আইন যদি ঘরে আদায় করতে পারি, সুন্নতে মুয়াক্কাদা তারাবীর নামাজ কেন নয়? নিশ্চয় আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আমাদের অন্তরের কথা জানেন। অতএব যেখানেই আদায় করি না কেন, তিনি তা কবুল করে নেবেন।
তাই অযথা রিস্ক না নিয়ে আসুন এবার আমরা সবায় ঘরেই তারাবী নামাজ আদায় করি। মসজিদ চারণ হউক সেই ৫/১০ নিয়েই। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন; নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।।
মুহাম্মদ ওয়ালিউল্যাহ
২২ এপ্রিল, ২০২০.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন