শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০

অজ্ঞতা শুধু অভিশাপ নয়, পাপ!

বনী ইসরাইল গোত্রে একজন অনন্য অদ্বিতীয় আবেদ ছিলেন। অপর দিকে এমন একজন দুশ্চরিত্র পাপিষ্ঠও ছিল ঐ সমাজে যার জোড় মিলানো ভার। একদিন ঐ আবেদ রৌদ্রজ্জ্বল  খোলা আকাশের নিচে একা বসেছিলেন। দেখা গেল একখণ্ড মেঘ তাঁর মাথার উপর ছায়া দিচ্ছে। পাপিষ্ঠ লোকটি পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। অনেক পথ হেঁটে বেশ ক্লান্ত হয়ে পরেছিল। তাই বিশ্রামের জন্য ছায়া খুঁজছিল। আবেদের মাথার উপর ঐ ছায়া দেখে পাপিষ্ঠ লোকটি মনে করলো আবেদের সঙ্গে কিছুক্ষণ মেঘের ছায়াতলে বসে শরীর শীতল করবে, আর তাঁর বরকতে কিছুটা পাপ মোচন করবে। আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিন হয়তো আবেদের উছিলায় তাকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন। 

এমন ভাবতে ভাবতে পাপিষ্ঠ গিয়ে আবেদের পাশে বসার চেষ্টা করলো। আবেদ তাকে দেখামাত্র বলে উঠলো— 'অরে নরাধম,  তোর মত পাপিষ্ঠ এই দুনিয়াতে আর দ্বিতীয়টি নেই। কোন সাহসে তুই আমার পাশে বসলি? শীঘ্র দুর হ আমার আশপাশ থেকে।' পাপিষ্ঠ লোকটি মনে কষ্ট নিয়ে তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালো এবং হাঁটা শুরু করলো। দেখা গেল মেঘ খণ্ডটিও তার মাথায় ছায়া দিতে দিতে তার সাথে সাথেই চলতে শুরু করলো। ঘটনার আকস্মিকতায় পাপিষ্ঠ লোকটি আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিনের দরবারে লাখো শুকরিয়া আদায় করতে থাকলো।

ঘটনার পর পরই তৎকালীন নবী আলাইহি ওয়াস সাল্লামের প্রতি আল্লাহ-র ওহি অবতীর্ণ হলো- 'এই পাপিষ্ঠ ও আবেদ উভয়কে নতুন ভাবে এবাদত কার্য আরম্ভ করতে বলে দাও।' কারণ সুস্পষ্ট— সুধরানোর ফলে পাপিষ্ঠের পাপ মোচন হয়ে গেছে, আর অহংকারের দোষে আবেদের এবাদত বিনষ্ট হয়ে গেছে।

উপরোল্লিখিত ঘটনাটি হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (র:)-র কিমিয়ায়ে সা'আদাত হতে সংগৃহীত। বাহ্যিকভাবে পূর্ণ বিকশিত ও স্বঘোষিত এই ধরনের আবেদের সাক্ষাত বর্তমান মুসলিম সমাজে হর-হামেশা দেখা যায় চোখে পরে। প্রচার প্রচারণায় তারা এমন ভাব দেখায়— মুসলমান ইসলাম ঈমান যেন তাদেরই একচেটিয়া ও একচ্ছত্র পৈত্রিক সম্পত্তি! তারাই যেন হাদিস, কোর'আন ও ইসলামের একমাত্র উত্তরাধিকারী এবং রক্ষক; অন্য সকল মানুষ যেন তাদের ভৃত্য!
  
ইসলামের মূল ঈমান ও আকিদার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো অনেকেই এখন আর বিবেচনায় আনে না বা আনতে চায় না বা আনতে পারে না। কিন্তু কেন?  কালের পরিক্রমায় ইসলামও এখন এক শ্রেণীর মানুষের কাছে শুধুই বৈষয়িক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের আগ্রাসনে প্রকৃত ইসলাম ও ইসলামী জীবন বিধানই কেমন যেন বদলে গেছে। যার ফলে এখন আর আমাদের সমাজে প্রকৃত আবেদের দেখা-সাক্ষাত মেলে না বা খুঁজে পাওয়া যায় না। অবশ্য হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম সেই চৌদ্দশ বছর আগেই এই অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে গিয়েছিলেন। 
  
তবে কি একজনও ভাল মানুষ নেই আমাদের সমাজে? —অবশ্যই আছে; এবং তাঁদের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। মুষ্টিমেয় কিছু খারাপ মানুষের ধাপটে বর্তমান সমাজে ভাল মানুষগুলো কাঁইমরা হয়ে পড়ে আছে, চুপচাপ থাকে। তাঁদের মাঝে এক ধরনের আল্লাহ ভীতি সব সময় কাজ করে। ইসলাম ও ঈমান রক্ষার্থে তাঁরা সব সময়ই ব্যতিব্যস্ত থাকে। ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রতি যুগেই এই শ্রেণীর মুসলমানরা সমাজে সবচেয়ে বেশি কোণঠাসা ছিল এবং আজও আছে। কারণটাও পবিত্র কোর'আন ও সহীহ  হাদিসেই সুস্পষ্ট; আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকেই সব সময় ঈমানী পরীক্ষায় ফেলে রাখতে ভালবাসেন। এই দুনিয়ার ভোগবিলাসে মত্ত হওয়ার কোন ধরনের  সুযোগ তিনি তাঁদেরকে খুব একটা দেন না।

পবিত্র কালাম পাকে মুনাফিকদের জন্য সূরা মুনাফিকুন নাজিল হয়েছে, ইহুদী নাসারার জন্য ইহুদুন বা নাসারুন নামের কোন সূরা নাজিল হয়েছে কি? —অবশ্যই না। যুগে যুগে দেখা গেছে বাহ্যিক আচ্ছাদনে আচ্ছাদিত  মুসলমান রূপি মুনাফিকরাই ইসলামের চৌদ্দটা বাজিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে এবং করছে। বাহ্যিকভাবে আমাদের কাছে তা ইসলামের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে হলেও, প্রকৃতপক্ষে তারা তাদের নিজেদেরকেই ধ্বংস করেছে করছে। 

মুনাফিকরা মুসলমানদের মাঝে সর্বযুগেই যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে, কিন্তু কোন কালেও টেকসই ছিল না তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি। সাময়িকভাবে তারা মুসলমানদের কোণঠাসা করতে পারে; যা আজও বিরাজমান। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লামের উপস্তিতিতেই তৎকালীন স্বীকৃত মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই কূটকৌশলে পিছনে থেকে উম্মতের মা-জননী হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদি আল্লাহু আনহার উপর মিথ্যা রটনা রটিয়েছিল। বর্তমান যুগের এই মুনাফিকরাও সেই একই চরিত্রের, একই বৃত্তের; সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানোতে তারা সিদ্ধহস্ত। আর তা ছড়ায় তারা ইসলামের নাম করেই।
  
ইসলামী জ্ঞানার্জন একজন মুসলিমের জন্য ফরজে আইন। ইসলাম না জানার ধর্ম নয়; জানতে হবে এবং বুঝতে হবে। ইসলাম সম্বন্ধে না জানার, না বুঝার অর্থাৎ জ্ঞানার্জন না করে অজ্ঞ থাকার কোন সুযোগ একজন মুসলিমের নেই। প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর  জন্যই ইসলাম জানা বা জ্ঞানার্জন করা ফরজ। এ ব্যাপারে পবিত্র কোর'আনুল কারীমে ও হাদিসে বিস্তর বর্ণনা রয়েছে। কোন মুসলিমই এ ব্যাপারে কোন ধরনের ছাড় পাবেন না রোজ হাশরের ময়দানে। কেউ সেদিন না জানার বাহানা দাঁড় করতে পারবে না। 
 
আমাদের সমাজের বেশির ভাগ মুসলিম ইসলাম শিক্ষার ব্যাপারে প্রচণ্ড রকমের উদাসীন। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়াটাকেই আমরা গৌরবের বিষয় মনে করি বা করছি। পবিত্র কুর'আন ও হাদীসের জ্ঞান নিতে আমরা মোটেও চাই না; বরং অনেকেই এড়িয়ে চলি। আর এই সুযোগটাই গ্রহণ করেছে এক শ্রেণীর তথাকথিত ঠকবাজ। ইসলামকে তারা ধোঁকাবাজিব হাতিয়ার বানিয়েছে, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ফায়দা হাসিলের অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করেছে। সমাজের সেই নির্দিষ্ট শ্রেণীকে তারা কূটকৌশলে করায়ত্ত করে ফেলে, ফেলেছে। আর এই সব মগজধোলাই করা ধর্ম জ্ঞানহীন মানুষের সহযোগীতায় তারা ইসালাম সম্বন্ধে জ্ঞাত অর্থাৎ যারা জানে বুঝে ও মান্য করে সেইসব লোকদেরকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করছে; এ পাপ,  অনেক বড় পাপ!
   
প্রকৃত একজন ভালো মানুষের সহবত এবাদতের চেয়েও কোন অংশেই কম নয়। ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় সব যুগেই ইসলামী সমাজে এমন আলোক বর্তিকা জন্ম নিয়েছিলেন, এবং পৃথিবীটাকে আলোকিত করতে চেষ্টা করে গেছেন। আবার অন্য ধরনের অতি উৎসাহী অতি ধার্মীকেরও আগমন ঘটেছিল; যারা সেইসব আলোর মানুষদেরকে তিরস্কার করেছে, কষ্ট দিয়েছে। আজকের পৃথিবীতে আলো ছড়ানো মানুষের চাইতে আলোহীন মানুষের সংখ্যাই বেশি। আর এমনটা হওয়াই সাবাভাবিক। সেই সারে চৌদ্দশ বছর আগেই আল্লাহ-র হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম বলে গেছেন— 'আলো থেকে যত দুরে যাওয়া যায় আলোর জ্যোতি যেমন কমতে থাকে,  তদ্রুপ আমা হতে যত দিন অতিবাহিত হবে ইসলামের দ্রুতিও ততো কমতে থাকবে।' 

চৌদ্দশ হিজরীর মুসলমানদের ঈমানী হাল হকীকত সম্পর্কিত অসংখ্য হাদিস সহীহ সিত্তায় উল্লেখ আছে। জ্ঞানী আলেম মাত্রই এ সব নিয়ে কোন দ্বিমত পোষণ করবেন না বলে আমার বিশ্বাস। বর্তমান যুগ ইসলামের এক অনিশ্চয়তার যুগ, কঠিন যুগ। ঈমান আমল অক্ষত রেখে বর্তমান যুগে বেঁচে থাকাটাই এক ধরনের অগ্নিপরীক্ষা, মহাসংকট। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকৃত জ্ঞানী আলেম মাত্রই এখন অত্যন্ত বিব্রত ও চিন্তাগ্রস্ত; সারা পৃথিবীর ইসলামী চিন্তাবিদ মাত্রই বিচলিত। তার পরেও—
 
ইয়ামুরুনা বিল মা'রুফ অ ইয়ানহাওনা আ'নিল মুনকার বা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করার অভিপ্রায়ে অনেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন এবং করছেন। কেউ শুনুক বা না শুনুক,  কেউ বুঝুক বা না বুঝুক,  কেউ মানুক বা না মানুক তাতে তাদের কারো কিছুই আসে যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিনের আদেশ মোতাবেক ইসলামের বাণী অন্যের কাছে প্রচারের অভিপ্রায়ে এই প্রচেষ্টা, আর এর উদ্দেশ্য একটাই— হয়তো এই ক্ষুদ্র  প্রচেষ্টাই পরকালে নাজাতের উছিলা হতে পারে। হে মাবুদ! আমার এই লিখাকেও তুমি নাজাতের উছিলা করো।
   
জ্ঞানার্জন যদি আল্লাহ-র শানে হয়- তা হলে তা হয়  আশির্বাদ, আর যদি দুনিয়ার কল্যাণের জন্য হয়- তা হলে তা হয় অভিশাপ; প্রকৃত জ্ঞানার্জনও এক ধরনের বুঁজুর্গি। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম আবূ হামেদ মুহাম্মদ গাজ্জালী রহমাতুল্লাহ আলাইহি পাঁচশত হিজরীর একজন অতি উঁচু মাপের অলি ছিলেন। মুসলিম বিশ্বের ক্ষণজন্মা মহাপুরুষদের মাঝে তিনিছিলেন অনন্য উচ্চতার একজন। সর্বকালের সেরা মুসলিম দার্শনিকদের অন্যতম একজন। সূক্ষ্ণদর্শী চরিত্র গঠনের শিক্ষক হিসাবেও তাঁর নাম সর্বজন স্বীকৃত। সেই হুজ্জাতুল ইসলামও তৎকালীন সময়ে মুর্তাদ হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছিলেন এক শ্রেণীর অতি ইসলামিষ্টদের দ্বারা। কিন্তু তাদের সেই মিথ্যা অপবাদের পরও তিনি কখনও থেমে থাকেন নি, থেমে থাকেনি তাঁর লিখা। মাত্র পঞ্চাশ বছরের আয়ুস্কালে তিনি অসংখ্য বই রচনা করে গেছেন যা ওলামায়ে সমাজে আজও অত্যন্ত সমাদৃত।
 
হুজ্জাতুল ইসলামকে নিয়ে লিখার অভিপ্রায় এই অধমের সুপ্ত বাসনা; যদি  বেঁচে থাকি হয়তো কোন এক সময় লিখবো। আজ যে উদ্দেশ্য নিয়ে লিখার সূচনা করেছি তা মুলত: এ দেশের এক শ্রেণীর তথাকথিত মুসলমানের মুখোশ উন্মোচিত করার অভিপ্রায়ে। কতটা পারবো তা আল্লাহ্‌ রাব্বুল আ'লামিনই ভালো জানেন।  

যারা আজ কথায় কথায় অন্যকে নাস্তিক বলে আখ্যায়িত করছে তারা আসলে নাস্তিক শব্দের আত্মিক বা আভিধানিক কোন অর্থই বুঝে না বা জানে না। বাহ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে যে আল্লাহ-কে বিশ্বাস করে না সে-ই নাস্তিক, কিন্তু আত্মিক অর্থের ব্যাপকতা অনেক বেশি কিছু। নাস্তিকতার সংজ্ঞায় যদিও বাহ্যিকভাবে একজন নাস্তিককে আমরা চিহ্নিত  বা শাব্দিক প্যাচে আবদ্ধ করে ফেলতে পারি, কিন্তু পবিত্র কালাম পাকে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে- এটি চিহ্নিত করা এক মাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের এখতিয়ার। আল্লাহ তা'আলার এখতিয়ারভূক্ত কাজটি যদি আমরা করে ফেলি, তবে কেমনে কি?  আজকাল এ দেশে এক শ্রেণীর তথাকথিত ঠকবাজ আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতেই এই কাজটিই করে যাচ্ছে অবলিলায় এবং সদর্পে! 
  
অযাচিতভাবে হয়তো বুঝে,  নয়তোবা না বুঝেই তারা যাকে ইচ্ছা তাকে নাস্তিক/মুর্তাদ বলে আখ্যায়িত করে যাচ্ছে, আস্তিকতা নাস্তিকতার সার্টিফিকেট বিতরণ করে যাচ্ছে! এ যে পাপ, এক কঠিন পাপ। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম বলেন,  'একজন মুসলিম যদি অন্য একজন মুসলিমকে নাস্তিক বলে তবে তা যে বলে তার নিজের দিকেই ফিরে যায়।'
  
আজকের পুরো মুসলিম সমাজ এমন হয়ে গেল কেন? এ দেশের বর্তমান সামাজিকতা এমন হয়ে গেছে— সুদ খাওয়া, ঘুষ খাওয়া যে ইসলামে জঘন্যতম অপরাধ, নিকৃষ্টতম পাপ— তা আলেম সমাজ আজ মুখফুটে বলতেই যেন লজ্জা পান! অবশ্য এর পিছনে যথেষ্ট  কারণও আছে। ঐ দিকে আজ আর যেতে চাই না। আস্তিকতা ও নাস্তিকতাও এখন অনেকটা দলীয় ব্যাপার-স্যাপার  হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর একটু ভেঙেই বলি— সব আস্তিকের দল যেন এদেশে বিএনপি-জামাত, আর সব নাস্তিকের দল যেন আওয়ামিলীগ! বিষয়টি খুবই হাস্যকর নয় কি? 
 
কাউকে নাস্তিক বলার আগে নিজের মুখ ও মুখোশটি প্রত্যেকেরই একবার ভাল করে দেখে নেয়া উচিৎ। একবার ভাবা উচিৎ কাকে নাস্তিক বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে?  হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লামের কথা ও বর্ণনানুযায়ী নিজকে বলা নয় কি?  অবশ্য আলেম নামধারী এক শ্রেণীর জ্ঞানপাপীও খুব সহজভাবেই এই সব নিকৃষ্ট শব্দগুলো অনায়সে ব্যবহার করে থাকে; কারো জন্যই যা সমুচিত নয় বা এসব বলা মোটেও উচিত নয়। 

তাছাড়া বাঙালি জাতি আজ সম্পূর্ণরুপে দু'টি ধারার বিভক্ত; এ বিভক্তির মুল কারণ এ দেশের স্বাধীনতা। সেই থেকে দেখে আসছি স্বাধীনতার পক্ষে কথা বললেই সেই ব্যক্তিকে বলা হয় নাস্তিক, ভারতীয় দালাল। আর যারা আমাদের তিন লাখ মা-বোনের ইজ্জত হরণ করেছে, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে রাঙিয়েছে এই দেশের জমীন শুধু তারাই কি তবে আস্তিক? বর্তমান জামানার তথাকথিত এইসব স্বঘোষিত আস্তিকেরাও আবার কেমন করে যেন সেই তাদের মতোই পাকিস্থান প্রেমিক! 

কেন যেন আজ আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে, কেউ উত্তর দেবেন কি? বাংলাদেশ নামের এই ব-দ্বীপটাকে কেউ ভালোবাসেন কি-না, বাসলে কতজন??  মুখ থেকে হুট করে কেউ বলবেন না, অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বলুন; সর্বদা স্মরণে রাখবেন—দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ।। 

মুহাম্মদ ওয়ালিউল্যাহ 
১৪ মে, ২০১৪.

৩টি মন্তব্য:

  1. ধর্মের অপব্যবহার একটি বহু পুরোনো রোগ।যা লিখেছেন তা একদম সঠিক।তবে এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারেন একমাত্র আল্লাহ্।আর পাকি প্রেমিদের বিষয়ে কি বলব ওরা জঘন্য।শুভকামনা সতত।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. এ দেশের মানুষ এখন পুরোপুরি দুই ভাগে বিভক্ত। সামনে যে কত কঠিন দিন আসছে, তা মনে হয় নীতিনির্ধারকেরা বুঝে উঠতে পারছে না। পরিস্থিতি সামাল দেয়াই খুব কঠিন হয়ে যাবে।
      ধন্যবাদ!

      মুছুন