সভ্যতা ও সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে মুসলমানদের শিক্ষা জাগরণ ও এর উৎকর্ষতার ইতিহাস অনস্বীকার্য; ৭ম শতাব্দীর ২য় দশকে আইবেরীয় উপদ্বীপ, তথা বর্তমান স্পেন এবং পর্তুগাল বিজয় ছিল মুসলমানদের এক গৌরবোজ্জ্বল স্বর্ণালী ইতিহাস। সভ্যতা, সৌন্দর্য ও শিক্ষার লীলাভূমি ও কীর্তিমন্দির হিসেবে যেসব মহানগরী পৃথিবীতে খ্যাতি লাভ করেছিল, স্পেনের কর্ডোভা মহানগরী ছিল তাদের অন্যতম। কর্ডোভা পরিচিতি পেয়েছিল জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে। তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম কর্ডোভা বিশ্ববিদ্যালয়ে সারা ইউরোপ থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতো মুসলিম শিক্ষা জগরণের প্রাণকেন্দ্র থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হতে।
যেখানে যাকিছু শিক্ষাউপকরণ হিসেবে পেত, সেখান থেকেই তার ভালটা তারা শিক্ষাব্যবস্থায় সম্পৃক্ত করত; ৭৫১ খ্রিষ্টাব্দে তালাসের যুদ্ধে চাইনিজরা যখন বন্দী হয় তখন তাদের কাছ থেকে মুসলিমরা কাগজ তৈরির পদ্ধতি শিখে নেয়। বিজ্ঞান, তথা তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নতি সাধনই ছিল ইসলামের স্বর্ণালী যুগের সূচনার উদ্দেশ্য এবং সে যুগের উত্থানের পেছনের এক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। জ্ঞান বিজ্ঞানের এমন কোন শাখা তখন ছিল না যে শাখায় মুসলমানের উন্নতি অগ্রগতি ও পদচারণা ছিল না। আজকের এই যন্ত্র সভ্যতার ডিজিটাল যুগে এসে কেউ যদি আধুনিক শিক্ষাকে পাশকেটে শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে পরে থাকতে চায় তবে তা হবে সবচেয়ে বড় মূর্খতা; অন্ধকারের গহীনে নিজে নিজে তলিয়ে যাওয়া।
রসায়ন, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোল, ইতিহাস, ধর্মতত্ত্ব জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় মুসলিম গবেষক ও বিজ্ঞানীদের একসময় যথেষ্ট দখল ছিল। মুহাম্মদ ইবনে মূসা আল খোয়ারিজমি, আবু রায়হান আল বিরুনি, মুসা বিন সাকির, ওমর খৈয়াম, আবুল কাশেম ফেরদৌসী, আল-মাসুদী, আত-তাবারি, ইবনে খালদুন এমন আরো অনেক মুসলিম জ্ঞানতাপস যুগে যুগে জ্ঞান চর্চা করে বিশ্বে যে আলোকবর্তিকা উড্ডীন রেখে গেছেন তা আজও পাশ্চাত্য সভ্যতার অমূল্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃত ও বিবেচিত। মুসলিমদের জ্ঞানচর্চা চলছিল ৫৫০ বছর; আর ঐসময়টা ছিল ইউরোপের ইতিহাসের এক অন্ধকার যুগ; একই সময়ে ভারতবর্ষ অবনত ছিল প্রতিক্রিয়াশীল ব্রাহ্মণাত্যের অধীনে, যা বৌদ্ধধর্মকে বিধ্বস্ত কিংবা বিকৃত করেছিল।
দার্শনিক আল-কিন্দি, আল-ফারাবি, ইবনে সিনা ও ইবনে রুশদ নামের তৎকালীন মুসলিম মনীষীরা পৃথিবীর ‘জ্ঞানভাণ্ডার’ নামে পরিচিত ছিলেন; অবশ্য বিশ্বব্যাপী আজও তাঁরা তা-ই আছেন। আল-কিন্দি রসায়ন, চক্ষুরোগসহ চিকিৎসা ও দর্শনে অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন; তিনি শতাধিক পুস্তক প্রণয়ন করে গেছেন। আবু আলী হোসাইন ইবনে সিনা মাত্র ১৮ বছর বয়সে চিকিৎসাশাস্ত্রের ব্যুৎপত্তি সৃষ্টি করে বিশ্বজোড়া অনন্য এক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন; চিকিৎসাবিজ্ঞানে যে দুটি বিশ্বকোষ তিনি রচনা করেছিলেন তা দ্বাদশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানের পথপ্রদর্শক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হতো, সেসব পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত ১৬ বার পুনঃমুদ্রিত হয়।
মোটামুটিভাবে ৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে ১৩তম শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত সময়কে ইসলামের স্বর্ণালী যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়; এই আলোকিত যুগেই আধুনিক বৈজ্ঞানিক যুগের অগ্রদূত হিসাবে কাজ করেছেন অসংখ্য মুসলিম বিজ্ঞানী ও জ্ঞানতাপস। সাম্রাজ্যবাদের গভীর চক্রান্তে আজকের পৃথিবীর অনেকে মধ্যযুগকে অন্ধকার ও বর্বর যুগ হিসাবে আখ্যা দিয়ে থাকে, বিজ্ঞানময় ধর্ম ইসলামকে জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রগতির পথে অন্তরায় হিসাবে বিবেচনা করে; প্রকৃত সত্য কিন্তু তা নয়। মধ্যযুগে পৃথিবীর অগ্রগতি উন্নতিতে একমাত্র ইসলামই ছিল মূল চালিকাশক্তি; ইসলামের স্বর্ণালী যুগে মুসলমানরাই ছিল পৃথিবীর সর্বক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ।
University বা বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটির উদ্ভব হয়েছে লাতিন Universitas Magistrorum et Scholarium, which roughly means "community of teachers and scholars: যার অর্থ - শিক্ষক ও পণ্ডিতদের সম্প্রদায়। বিদ্যালয় শব্দটির সাথে বিশ্ব শব্দটি যোগ করার অর্থ হলো - এই বিদ্যাপীঠ শুধুমাত্র কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশ বা জাতির জন্য নয়, বরং এটি সারা বিশ্বের সব মানবজাতির জন্য। এখানে সারা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের যেকোন দেশের যেকোন মানুষ পড়তে ও পড়াতে পারবে। বর্তমানে পৃথিবীতে এমন লাখো ইউনিভার্সিটি আছে, কিন্তু কোনটি পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় তা নিয়ে বেশ কয়েকটি ভিন্ন অভিমত থাকলেও জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization) বা ইউনেস্কো (UNESCO)-এর ঘোষনানুযায়ী কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর প্রথম স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়।
[Ref : A History of the University in Europe. Vol. I : Universities in the Middle Ages, Cambridge University Press, 2003, ISBN 978-0-521-54113-8, pp. 35–76]
অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের কোল ঘেঁষে আফ্রিকার সবচেয়ে পশ্চিমের একটি দেশ মরোক্কো; ইউরোপের খুব কাছে হলেও দেশটি ইউরোপীয় নয়। বর্তমানে রাজধানী রাবাত ছেয়ে গেছে বিদেশি গাড়িতে, অথচ সেখানেই এখনও উট ছাড়া কোথাও ভ্রমণ অকল্পনীয়৷ মরক্কোর ফেজ নগরীতে পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১০০তম বর্ষপূর্তি ঘটে আরম্বর এক জাতীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয় চালুর সময় ছিল ইসলামের স্বর্ণালী যুগ। নবম শতাব্দীর প্রথম দিকে ফেজ নগরী ছিল অনেকটা গ্রামসদৃশ। তখন মরক্কোর শাসক আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন - ‘হে আল্লাহ! আপনি এ নগরীকে আইন ও বিজ্ঞানের কেন্দ্র হিসেবে কবুল করুন।’
সে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ফেজ নগরীর এক বিধবা ধনাঢ্য মহীয়সী নারী চালু করেন কারাওইন মসজিদ; কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয় সেই মসজিদের অংশ হিসেবেই ৮৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ফাতিমা আল ফিহরি নামের এক মুসলিম মহীয়সী নারী; তাঁর বাবা ছিলেন ফেজ নগরীর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আল ফিহরি। আল ফিহরি পরিবার ফেজে আসেন নবম শতাব্দীর প্রথম দিকে; তাঁরা এখানে আসেন তিউনিসিয়ার কারাওইন থেকে। সে সূত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রাখা হয় কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের সঙ্গে কারাওইন থেকে তাঁদের সমাজের বেশ কিছু লেখক ফেজে এসে নগরীর পশ্চিমের অংশে বসবাস করতে শুরু করেন। ফাতিমা আল ফিহরি ও তাঁর বোন মরিয়ম আল ফিহরি উভয়েই ছিলেন সুশিক্ষিত। তাঁরা উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার কাছ থেকে প্রচুর অর্থসম্পদ পেয়েছিলেন। ফাতিমা তাঁর অংশের সবটুকো অর্থ খরচ করে তাঁর সমাজের লেখকদের জন্য একটি মসজিদ তৈরি করে দেন।
ধীরে ধীরে এটি মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ শিক্ষা কেন্দ্রে পরিণত হয়। মধ্যযুগে মুসলিম বিশ্ব ও ইউরোপের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও জ্ঞান-বিজ্ঞান বিনিময়ে কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা শিক্ষক ছিলেন ইবনে মাইমুন (১১৩৫-১২০৪), আল-ইদ্রিসি (মৃত ১১৬৬), ইবনে আরাবি (১১৬৫-১২৪০), ইবনে খালদুন (১৩৩২-১৩৯৫), ইবনে খতিব, আল-বিতরুজি (অ্যালপে ট্রেজিয়াম), ইবনে হিরজিহিম ও আল ওয়্যাজ্জেন আরো অনেকে। ১৩৪৯ সালে সুলতান আবু ইনান ফ্যাবিস বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন; অসংখ্য মূল্যবান পাণ্ডুলিপি রাখা হয় ওখানে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব মূল্যবান পাণ্ডুলিপি রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে - হরিণের চামড়ার উপর ইমাম মালেক (রহ.)-এর লেখা মুয়াত্তার পাণ্ডুলিপি, ১৬০২ সালে সুলতান আহমাদ আল মনসুরের দেওয়া কোরআনের কপি, সিরাতে ইবনে ইসহাক, ইবনে খালদুনের বই ‘আল-ইবার’-এর মূল কপি।
কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হতো কোরআন ও ফিকহ (ইসলামী আইনশাস্ত্র), ব্যাকরণ, বক্তৃতাদানবিদ্যা বা অলংকারশাস্ত্র, যুক্তিবিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, ইতিহাস, ভূগোল ও সংগীতবিদ্যা। শুরুতে এটি একটি ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র হলেও, অচিরেই এর ছাত্রসংখ্যা দাঁড়ায় আট হাজারে; যারা সেখানে চিকিৎসাবিদ্যা থেকে শুরু করে ভূগোল পর্যন্ত অনেক বিষয়েই উচ্চশিক্ষা লাভ করতেন। আরব শক্তির সোনালি দিনগুলোতে মুসলমানরাই ছিল বিশ্বের জ্ঞানবিজ্ঞান জগতের অভিজাত সম্প্রদায়। মুসলমানরাই পরিপূর্ণতা দিয়েছিল অ্যালজাবরা-র; আরবি ‘আল-জাবর’ থেকে এসেছে অ্যালজাবরা-র নাম। মুসলমানরাই বিশ্লেষণ জ্যামিতি, সমতলীয় ত্রিকোণোমিতি ও গোলকীয় ত্রিকোণোমিতির জনক; জ্যোতির্বিদ্যার অগ্রদূত। ফেজ নগরীতে তখন বিশ্বের সকল পণ্ডিতবর্গের সমাবেশ ঘটতো। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এক ফরাসি তরুণ, যিনি পরে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন পোপ দ্বিতীয় সিলভারস্টার (৯৯৯-১০০৩) নামে।
ইউরোপের জাগরণের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের স্বর্ণালী যুগের অবসান ঘটে; সাম্রাজ্যবাদের নতুন ইতিহাস শুরু হয়। মধ্য-অষ্টাদশ শতাব্দীতে কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কূটকৌশলে নেমে আসে এক কালো অধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যায় জ্ঞানী-গুণী আর বিজ্ঞানীরা; সেখানে অবশেষ পরে থাকে শুধু ধর্মীয় শিক্ষা নেয়া আলেম-ওলামারা। ১৯১২-৫৬ সময়ে মরক্কো ছিল ফ্রান্সের প্রটেক্টরেট। সাম্রাজ্যবাদের জাঁতাকলে নিষ্পেষিত হয়ে সেই সময়টায় এ বিশ্ববিদ্যালয় একদম ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছিল; তখন সেখানে পরীক্ষা ও ডিগ্রি দেয়া বলতে গেলে বন্ধ হয়ে যায়, শুধু ধর্মশিক্ষা কোনোমতে চালু থাকে। ছাত্রদের তখন থাকতে হতো অনুপযুক্ত আলোহীন ও বায়ুহীন প্রকোষ্ঠে, জানালাহীন কক্ষে; ঘুমাতে হতো মেঝেতে, রান্না করতে হতো কয়লার চুলোতে।
১৯৫৬ সালে মরক্কো পুনরায় স্বাধীন হয়; জাতিকে বিংশ শতাব্দীর উপযোগী করে গড়ে তোলার দৃঢ়তা নিয়ে বাদশাহ পঞ্চম মোহাম্মদ আরেকবার কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রমে ধর্মীয় পাঠপরিধি কমিয়ে চালু করেন গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, বিদেশী ভাষাবিষয়ক পাঠক্রমসহ নানাবিধ বিষয়। ১৯৫৭ সালেই তিনি সেখানে চালু করেন মহিলা শাখা; এর মাধ্যমে তিনি রক্ষণশীল মুসলিম সমাজে একটি ঝাঁকুনি দিয়ে দেন। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্রীও লেখাশোনা করছে। ১৯৬৩ সালে কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয় মরক্কোর আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় পদ্ধতির সাথে যুক্ত হয়ে বর্তমানে এটি বিশ্বের অন্যতম একটি ধর্মীয় ও জাগতিক শিক্ষা কেন্দ্র।
শিক্ষাকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, মৌলিকভাবে একে দুই ভাগে ভাগ করা যায়; জাগতিক শিক্ষা ও দ্বীনী শিক্ষা। মানুষের জাগতিক প্রয়োজন পূরণের উপযোগী জ্ঞান ও বিদ্যা হচ্ছে জাগতিক শিক্ষা; পক্ষান্তরে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির জ্ঞান হচ্ছে দ্বীনী শিক্ষা। প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনগুলো পূরণে এবং দুনিয়াতে অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে মানুষকে দান করা হয়েছে পঞ্চ ইন্দ্রিয় ও বিবেক-বুদ্ধি-বিবেচনা; এগুলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য ইসলামে পূর্ণমাত্রায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে জাগতিক শিক্ষার। আর মানুষ হিসেবে উৎকর্ষতা লাভ ও পরকালের মুক্তিতে দ্বীনী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম, এর কোন বিকল্প নেই।
আর আমরা? বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর এই ডিজিটাল যুগে এসেও এক দল মেতে উঠেছে যথসব অসম প্রতিযোগীতায়; কওমী মাদ্রাসাতে আধুনিক জাগতিক শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে তারা। কে কাকে কিভাবে দোষারোপ করতে পারে, কার উপর কি চাপিয়ে দেয়া যায়, কি করে অন্ধকার যুগকে আলিঙ্গন করা যায়, ভাস্কর্য নিয়ে নোঙড়া মাতামাতি - এইসব নিয়েই মেতে আছে। সেকেলে ধ্যানধারণা পরিহার করে মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে সময়োপযোগী শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে চলমান বিশ্বের সাথে সমতালে এগিয়ে যাওয়াই একজন খাঁটি মুসলিমের ঈমানী দায়িত্ব।
মুহাম্মদ ওয়ালিউল্যাহ্
২৫ এপ্রিল, ২০১৭.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন