রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১

আল্লাহ ছাড় দেন, ছেড়ে দেন না:



আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা-র কৃতজ্ঞতায় ও প্রশংসায় বান্দার নেয়ামত বেড়ে যায়; আর যদি এর ব্যতিক্রম হয় তবে কঠোর শাস্তির ঘোষণাও রয়েছে। তিনি সরাসরি ঘোষণা করেছেন— 'যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে নেয়ামত আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ —(সুরা ইবরাহিম : ৭) 

একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের স্মরণ রাখা উচিত— সকল নেয়ামতের একমাত্র মালিক আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা; দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানের সকল অনুগ্রহের মালিক একমাত্র আল্লাহ। সুতরাং মালিকের অনুগ্রহ স্বীকার করায়ই রয়েছে পরম আনন্দ ও চরম পুরস্কার। আর আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের অনুগ্রহকে অস্বীকার করা বা অবজ্ঞা করা কোনো ভাবেই আদব ও কৃতজ্ঞতার মাঝে পড়ে না। আল্লাহ সুবহানাহু  তা'আলা মানুষকে তাঁর অফুরন্ত নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন— 'তোমরা যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না।' —(সুরা নহল : ১৮) 'তোমাদের কাছে যেসব নেয়ামত রয়েছে, তা তো আল্লাহর কাছ থেকেই এসেছে।' —(সুরা নহল : ৫৩) 'সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব; আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না।' —(সুরা বাক্বারা : ১৫২) 

কোন বান্দা যখন শুধুমাত্র  আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলাকে ভয় করে, তখনও তিনি বান্দার সব অবস্থা দেখেন এবং জানেন; আর যখন কোন বান্দা আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ ও আনুগত্যের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যায়, তখন তিনি কি করেন? বান্দাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন— 'তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের পরওয়া করছ না। অথচ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পর্যায়ক্রমে।' —(সুরা নুহ : ১৩-১৪) অন্যত্র তিনি আরও বলেছেন— 'আর তিনি জানেন তোমরা যা গোপনে কর এবং তোমরা যা প্রকাশ্যে কর।' —(সুরা তাগাবুন : ৪) 

তাই আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলার অবধ্যতা না করে তাঁর দিকে ফিরে আসাই বান্দার একমাত্র কাজ হওয়া উচিত। তিনি বান্দার উপর অসীম ক্ষমতাবান, বান্দা তাঁর অধীন। অতএব, তাঁর দিকে ফিরে যাওয়া ছাড়া বান্দার কোনোই মুক্তির পথ বা উপায় খোলা নেই। আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা স্পষ্টতই উল্লেখ করেছেন— 'এমন কোন জীব-জন্তু নেই, যে তাঁর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।' —(সুরা হুদ : ৫৬)' 'এবং আল্লাহর উপরই তোমরা নির্ভর কর, যদি তোমরা মুমিন হও।' —(সুরা মায়েদা : ২৩) 

মামুনুল হক প্রসঙ্গ নিয়ে কিছুই আর বলার নেই। কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা যাদের অন্তরে বক্রতা দেন, তিনি তাদের থেকে সকল নেয়ামত কেঁড়ে নেন; কারো রুহানি সন্তানরা এসব বুঝে না, বুঝবে না। গতকাল শনিবার দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম নিজ কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান— পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল জানিয়েছেন, প্রথম বিয়ে শরিয়ত বা আইনসম্মতভাবে হয়েছে। আর পরবর্তী যে দুটি বিয়ের কথা তিনি স্বীকার করেছেন সেগুলো চুক্তিভিত্তিক, কোনো কাবিননামা নেই। 

মামুনুল হকের পরের দুটো বিয়ের চুক্তিগুলো হচ্ছে তারা স্ত্রী থাকবে, কিন্তু কোনো মর্যাদা পাবে না। স্ত্রী হিসেবে মেলামেশা করতে পারবে, কিন্তু সম্পর্কের কোনো অধিকার তারা পাবে না। একই সাথে কোনো দাবি-দাওয়া বা সন্তান ধারণ করতেও পারবে না তারা। আমরা সকলেই জানি প্রচলিত আইনের পরিপন্থী এ ধরনের বিয়ের চুক্তি, কিন্তু ইসলামি শরীয়া আইন কি বলে? আপনি কি জায়েজ মনে করেন?? 

পরিশেষে, দুটো কথা বলে শেষ করছি— জ্ঞানান্ধ-বধির কখনো আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলার রহমতের চাদরে আবৃত হতে পারে না। আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা আল-আদল, সর্বোত্তম ন্যায়-বিচারক। তিনি মানুষের অন্যায়ের অবশ্যই ভয়ংকর শাস্তি দেন এবং দেবেন। মনে রাখবেন—  মহান রাব্বুল আলামীন ছাড় দেন, কিন্তু ছেড়ে দেন না; কোন মানুষেরই সাধ্য নেই অযথা খালি খালি কাউকে হয়রানি করার বা লা'নতপূর্ণ অপমান করার।।

মুহাম্মদ ওয়ালিউল্যাহ 
২৫ এপ্রিল, ২০২১.

1 টি মন্তব্য: