চারদিকে চোখ ফেরালেই একটি প্রশ্ন বারবার মনে উদিত হয় - সমাজের মানুষগুলো কি দিন দিন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে? গণমাধ্যমে চোখ রাখলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে - ধর্ষণ, খুন, চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিচিত্র সব অপরাধমূলক ঘটনা। খুনের পর লাশ গুম, মেরে ঘরের খাটের নিচে মাটি চাপা দিয়ে লাশ লুকিয়ে রাখা - এসব নানান ধরনের লোমহর্ষক গা শিউরে ওঠা একেকটি ঘটনা এখনকার গণমাধ্যমের প্রতিদিনের ভয়াবহ খবর। দিনের পর দিন এসব ঘটনা হিংস্র থেকে হিংস্রতর রূপ ধারণ করছে, অপরাধ প্রবণতা এখন সমাজ থেকে একেবারে ঘরের ভেতর প্রবেশ করেছে; পারিবারিক অপরাধ বেড়েছে বহুগুণ এবং ভয়াবহতা হিংস্রতাও বেড়েছে ততোধিক। কেন যেন বারবার আমার মনে হয়, তীব্র-উগ্র-বিদ্বেষগ্রস্ত রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতাই এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী।
নিঃসন্দেহে পৃথিবীর যে কোন দেশ ও জাতির রাজনৈতিক সংস্কৃতি সে দেশ ও জাতির মানসিক পরিপক্কতার একটি পরিমাপ সূচক; সমাজ বিজ্ঞানীরা কোন জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি আর আচার আচরণ কিভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে এবং তার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর ভূমিকা নির্ধারিত হয় সেটা বুঝাতে এই পরিভাষাটি ব্যবহার করে থাকেন। কাজেই একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তনে উদ্যোগী হতে হলে সে দেশের জনগণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি জানা অত্যান্ত জরুরী। Almond এবং Verba রাজনৈতিক সংস্কৃতির বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, "The specifically political orientations - attitudes towards the political system and its various parts, and attitudes toward the role of the self in the system.”
যে কোন জাতির পরিচয় নির্ধারণে একজন নির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব থাকেন; যেমন - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয়তাবোধ তৈরীতে জর্জ ওয়াশিংটন কেন্দ্রীয় নিয়ামক হিসেবে স্বীকৃত, রাণী ভিক্টোরিয়া ইংল্যাণ্ডের আইকন, মহাত্মা গান্ধী ভারতের জন্য যে ভাবে প্রযোজ্য - জিন্নাহ-রও ঠিক সে রকমই একটি ভূমিকা রয়েছে পাকিস্তানের রাজনীতিতে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের বাংলাদেশের জন্য তেমন কোন একক ব্যক্তিত্ব আজও গড়ে ওঠেনি। এখানে এখনো কেউ মুজিব সৈনিক, কেউ-বা জিয়ার, এরশাদ কোথাও কোথাও হামাগের পোলা, কেউ কেউ গোলাম আজমের জন্য তোলা, কারো ধমনীতে এখনো বহমান মাস্টারদা সূর্যসেনের রক্ত; প্রকৃত বাংলাদেশী বলে যেন কেউ-ই নেই!
সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিচায়ক হলো পরমত সহিষ্ণুতা; অপরের মতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, শ্রদ্ধাভাব। পশ্চিমের গণতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভ হলো - পরমত সহিষ্ণুতা; 'আমি আপনার মতকে পছন্দ করিনা, কিন্তু আপনার মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজনে আমি আমার নিজের প্রাণ দেবো।’ - এই মূলনীতি পশ্চিমের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আর মানসিকতাকে পরিপক্কতা দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে পরমত সহিষ্ণুতা সুদূর পরাহত। এখানে কেউ রাম, কেউ বাম, আবার কেউ পাকিস্তান বা ভারতের দালাল; কেউ-বা রাজাকার-আল বদর-আল সামস, আবার কেউ-বা আমেরিকার দালাল। কেউ-বা মস্কোতে বৃষ্টি হলে ঢাকায় ছাতা ধরেন, কেউ-বা একই কাজ করেন দিল্লীতে বৃষ্টি হলে। পছন্দ না হলেই যে কোন ব্যক্তির চরিত্র হননে এদেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা চরম উৎসাহী হয়ে উঠেন এবং উপহাস, গিবতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এই অবস্থা বাংলাদেশের মানুষকে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে বিভক্ত করে রেখেছে; একক জাতীয়তাবোধ সৃষ্টি হতে দেয়নি। সাধারণ জনগণের হৃদয়ের একটি প্রশ্ন - 'আমরা বাঙালী না বাংলাদেশী?' - তা-ই আজও পুরোপুরি মীমাংসিত হয়নি। আর এ জন্যই দেশে রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সহিষ্ণুতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহযোগিতার বড় অভাব পরিলক্ষিত হয়; বরং দিনদিন বেড়েই চলছে।
১৯৭৩ সালের একটি ঘটনা, ন্যাপ-এর সভাপতি ছিলেন তখন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কট্টর একজন সমালোচক। সরকারের বিরুদ্ধে একবার তিনি রাজপথে অনশন করেন; সেই অনশনও ভাঙান বঙ্গবন্ধু নিজেই। মাওলানা ভাসানীর মুখে শরবত তুলে দিয়ে অনশন ভাঙানোর সেদিনের সেই ইতিহাস অনেকেরই জানা। আরেকটি ঘটনা, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক তখন ছিলেন কাজী জাফর আহমদ। এক ঈদে কাজী জাফর আহমদ বহু খোঁজাখুঁজি করে মওলানা সাহেবের জন্য পছন্দের একটি পোশাক কিনেন, সঙ্গে মাওলানা পত্নীর জন্যও। ঈদের আগের দিন মাওলানার বাড়িতে সেই পোশাক নিয়ে কাজী জাফর আহমদ গিয়ে নিজে উপস্থিত হন। পোশাক দেখে খুশি হয়ে মাওলানা বলেন, "তোমার দেয়া পোশাকটি আমি ঈদের দিন বিকেলেই পড়বো।"
কথা শুনে কাজী জাফর তো থ হয়ে যান। এতো খোঁজাখুঁজি করে আনা পোশাক মওলানা ভাসানী পড়বেন বিকেলে? তা তিনি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। কাজী জাফরের ইচ্ছা, এই পোশাক পড়ে মওলানা ভাসানী ঈদের জামাতে যাবেন। একপর্যায়ে মাওলানা ভাসানীর কাছে বিকালে এই পোশাক পড়ার কারণ জানতে চান। মাওলানা সাহেব তাকে জানান, "ঈদের জামাতে যাবো মুজিবের দেয়া পোশাক পড়ে; রাতেই মুজিবের পোশাক পেয়ে যাবো।"
তাজ্জব বনে যান কাজী জাফর আহমদ এবং বলেন, "বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আপনি রাজপথে আন্দোলন করছেন, তার সরকারের সমালোচনা করছেন, আর তার দেয়া পোশাক পড়ে আপনি ঈদের জামাতে যাবেন?"
মওলানা সাহেব তখন কাজী জাফরকে বলেন, "শোন জাফর, শুধু কালকের ঈদই নয়, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মুজিবের দেয়া পোশাক পড়ে আমি ঈদের নামাজ পড়ি। পাকিস্তান আমলে মুজিব জেলে থাকলেও তার স্ত্রী ঈদের পারিবারিক বাজারের সঙ্গে আমার পোশাক কিনতে কখনো ভুলতো না। যথারীতি ঈদের আগের রাতে সেই পোশাক আমার কাছে পাঠিয়ে দিতো সে।"
১৯৯২ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মিলনায়তনের এক অনুষ্ঠানে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের শিষ্টাচার প্রসঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে কাজী জাফর আহমদ নিজে এসব কথা তার বক্তব্যে তুলে ধরেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব নিজে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছেন, ১৯৭৪ সালের দিকে আমরা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আন্দোলনে পুলিশি হামলায় আহত হয়ে পিজি হাসপাতালে ভর্তি হই আমি। হঠাৎ রাতে দেখি বঙ্গবন্ধু এসে হাজির। আমাকে দেখে বঙ্গবন্ধু বললেন, "কি হইছে তোর। আমি বিষয়টি দেখতেছি।"
এমন কথাও প্রচলিত আছে, ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন মুসলিম লীগের নেতা। স্বাধীনতার পর তিনি কারান্তরীণ থাকার সময় বঙ্গবন্ধু তাকে জেলে চিঠি লিখতেন; টেলিফোন করে কথা বলতেন, খোঁজ-খবর রাখতেন। অন্যদিকে জেলে থাকা অবস্থায় মুসলিম লীগ নেতা সবুর খানের পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়মিত রাখতেন বঙ্গবন্ধু।
এদেশের রাজনীতিতে এখন আর সেই রকম সৌহার্দ সংস্কৃতি নেই; সবকিছু কেমন যেন পাল্টে গেছে। এমন কি, একই পরিবারের সদস্য হলেও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের সদস্যের মাঝেও ব্যক্তিগত বিরোধ এখন হরহামেশা চোখে পড়ে। বিপদে পরলেও একজন আরেকজনের খবর পর্যন্ত নিতে দেখা যায় না; বরং উল্টো আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এসব কেমন সংস্কৃতি শুরু হলো এই দেশে? রাজনীতি এখন যেন অপাংক্তেয় কোন কিছু, যারা করেন তারা সবাই যেন অস্পৃশ্য-অচ্ছুত! কারণ তো রাজনীতিবীদরাই; ওনারা এখন আর সুন্দর কিছু করতে চান না। তাই, এখন দেখা যায় যতসব নিকৃষ্টতা ও জঘণ্যতা; কে কার সম্পর্কে কত বাজে কটূক্তি করতে পারেন চলছে যেন তারই এক ধরণের অসম প্রতিযোগিতা। কিন্তু একটি ভাল জিনিস আমাদের দেশে স্পষ্ট লক্ষ্যনীয় হচ্ছে দিনদিন - প্রশাসনিক ও নির্বাহী ক্যাডাররা এসবের উর্দ্ধে উঠে যাচ্ছেন। সত্যি, শিষ্টাচার ও পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে কেমনে কি?
অনেকের মতে - এদেশের রাজনীতি এখন জঘণ্য একটি বিষয়, রাজনীতি মানেই নোংরামি; তথাপি, দেশের প্রশাসনিক ও নির্বাহী পদে অসীন থাকাদের মানসিকতার মাঝে যে একটি অসম্ভব ও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, বিগত কয়েকদিন আমি বাংলাদেশ পুলিশ-এর সাথে যোগাযোগ করতে যেয়ে তা বেশ বুঝতে পেরেছি। দেশের শিক্ষা উন্নয়নের প্রভাব তাদের মাঝেও পড়েছে, তাদের আচার-আচরণ-ব্যবহারে অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে, যা বুঝতে আমাকে বেশি বেগ পেতে হয়নি। রাজনৈতিক নোংরামি যতই থাকুক না কেন, দেশের প্রশাসন ক্যাডারের দক্ষতা যে অনেক বেড়েছে এগিয়েছে, তা বুঝতে আমার কোন অসুবিধা হয়নি। আমার বিশ্বাস, এমন করেই একদিন এ দেশ ও এ জাতি বিশ্বের বুকে শ্রেষ্ঠ সভ্য ও ভদ্র একটি জাতিতে পরিনত হবে; প্রয়োজন শুধু রাজনীতিবীদদের মানসিকতার পরিবর্তনের।
রাজনীতিবিদদের প্রথম এবং প্রধান শর্তই হলো দেশপ্রেম; আর চরিত্রের প্রধান ভূষণ হবে সহিষ্ণুতা, শিষ্টাচার ও পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ। কিন্তু আমাদের দেশের কোন কোন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী যে ভাষায় কথা বলে থাকেন, বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে থাকেন জনগণ তা শুনে বেশিরভাগ সময়ই হতবাক হয়ে যায়। একদল আরেক দলের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি, একে অপরের প্রতি অশালীন অমার্জিত ব্যবহার এখন আমরা প্রতিনিয়তই দেখে আসছি। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের প্রধানকে নিয়েও আমরা রাজনীতিবীদদের অনেককে অশালীন, অমার্জিত অনেকটা অশ্লীল মন্তব্য করতে শুনে থাকি; যা করা মোটেও উচিত নয়। ডেল কার্নেগীর ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়, "আমার জনপ্রিয়তা, আমার সুখ নির্ভর করবে আমি কেমন করে লোকের সঙ্গে ব্যবহার করবো তার উপর।"
বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি দিনেদিনে আরো বিধ্বংসীর দিকেই প্রবাহিত হচ্ছে; কিন্তু সেটি আমাদের কারোই কাম্য নয়। আমরা সবাই জানি এবং অনুভব করি বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনার দেশ; তাই এখানে প্রয়োজন একটি ব্যাপক বিপ্লবের। তবে সেটা সরকার বদলে আরেকটা সরকার প্রতিষ্ঠার বিপ্লব নয়, বরং এ বিপ্লব হবে আমাদের সামজিক অবস্থান পরিবর্তনের বিপ্লব। দেশের পুরো রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমুল পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সকলকে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে কেবল বাংলাদেশী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর এজন্য অবশ্যই জাতির কল্যাণের স্বার্থে তরুণদের গা ঝাড়া দিয়ে উঠা অতি জরুরী। একটা দেশকে পরিবর্তনের জন্য অনেক লোকের দরকার নেই, দরকার কেবল সিদ্ধান্ত নিতে পারার মতো সাহসী একটি অংশের; দরকার কথার চেয়ে কাজ করে দেখানোর মতো কিছু লোকের।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ অত্যন্ত রাজনীতি সচেতন। দেশের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে চায়; কিন্তু ইদানীং দেখা যাচ্ছে রাজনীতি পছন্দ না করা লোকের সংখ্যাই সমাজে দিনদিন বাড়ছে। অবশ্য তাদের অনেকেই আবার রাজনীতির খুঁটিনাটি বিষয়ে এমন চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন যা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য খুবই আশাব্যাঞ্জক। এদের বেশির ভাগই দেশের বড় দু'দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেও এতোটুকো পিছুপা হন না, বরং অত্যন্ত তৎপর। আমি আরো খেয়াল করে দেখেছি, তাদের অনেকেই সরাসরি রাজনৈতিক কোন দলের সাথে সম্পৃক্ত নন; কিন্তু এটা বুঝা যায়, দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে তারা প্রচন্ড ভাবেন। এমনসব লোকগুলোই খাঁটি দেশপ্রেমিক এবং তারাই সর্বান্তকরণে দেশকে ভালোবাসেন, সর্বক্ষণ দেশের মঙ্গল কামনা করেন এবং দেশের প্রতিটি ব্যাপারে তারা খুবই সচেতন।
আমার বিশ্বাস, দেশপ্রেম ও সচেতনতা আছে বলেই তারা এসব করেন। দেশপ্রেম না থাকলে কোনভাবেই তা করতেন না বা দেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়াও কারো পক্ষে সম্ভব হতো না। একমাত্র দেশপ্রেমই একজন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে কারো খারাপ কাজের সমালোচনা করার, ভাল কাজের প্রশংসা করার। একজন দেশপ্রেমিকের পক্ষেই দেশের ভালমন্দ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে এমন করে কথা বলা সম্ভব।
কোন কিছুর প্রয়োগ দেখার পরই তত্ত্বের সৃষ্টি হয়, প্রয়োজন পড়ে সেটি ব্যাখ্যা করার। স্যার আইজ্যাক নিউটন কি গতি সূত্রের আবিষ্কারক, নাকি ওটার সন্ধান দাতা? কিংবা ক্রিস্টোফার কলোম্বাস কি আমেরিকা খুঁজে পেয়েছিলেন, নাকি সেটা আবিস্কার করেছিলেন? - এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজে নিলেই আমরা বুঝবো আমাদের অভাব কোথায়? তাহলেই ব্যাখ্যার জন্য আর আমাদের কারো দ্বারস্থ হতে হবে না, প্রয়োজন হবে না সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অন্যের কোন প্ররোচনার বা উপদেশের। পরিশেষে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর সাথে সুর মিলিয়ে আজ কেন যেন বলতে ইচ্ছে করছে -
আমরা শক্তি আমরা বল
আমরা রচি ভালোবাসার
আশার ভবিষ্যৎ,
মোদের স্বর্গ-পথের অভাস দেখায়
আকাশ-ছায়াপথ!
মোদের চোখে বিশ্ববাসীর
স্বপ্ন দেখা হোক সফল।।
মুহাম্মদ ওয়ালিউল্যাহ
১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭.